মঙ্গলবার ১৫ এপ্রিল ২০২৫ - ২০:৩২
আয়াতুল্লাহ আরাফির তেহরান সফর, রাজধানীর হাওজার বিকাশে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা 

তেহরান হাওজার জন্য ৫ বছরের একটি পরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে, যার শেষ বছর ছিল ১৪০৩ (ইরানি সাল)। এই পরিকল্পনার সূচনা হয়েছিল ১৩৯৮ সালে এবং এর লক্ষ্য ১৪১৪ সালের মধ্যে গুণগত ও পরিমাণগত উন্নতির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা।

হাওজা নিউজ এজেন্সি রিপোর্ট অনুযায়ী, তেহরানের হাওজায়ে ইলমিয়ার পরিচালক হুজ্জতুল ইসলাম ওয়াল মুসলেমিন রহিমি সাদিক আজ বিকেলে গাদীর কনফারেন্স হলে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে এক সংবাদ সম্মেলনে আয়াতুল্লাহ আরাফির তেহরান সফর নিয়ে বিস্তারিত প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন এবং এই সফরকে হাওজার অগ্রগতির এক মোড় ঘোরা মুহূর্ত হিসেবে বর্ণনা করেন।

তিনি বলেন, তেহরান হাওজার জন্য ৫ বছরের একটি পরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে, যার শেষ বছর ছিল ১৪০৩ (ইরানি সাল)। এই পরিকল্পনার সূচনা হয়েছিল ১৩৯৮ সালে এবং এর লক্ষ্য ১৪১৪ সালের মধ্যে গুণগত ও পরিমাণগত উন্নতির লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা। এই দৃষ্টিভঙ্গিতে, হাওজা তেহরানকে মানবিক ও পেশাগত চাহিদা পূরণে সক্ষম হতে হবে—পরামর্শ, প্রচার, এবং সামাজিক ক্ষেত্রে দক্ষ জনবল গড়ে তোলার মাধ্যমে।

সব হাওজা পাঁচ বছর মেয়াদি পরিকল্পনার আওতায়

তিনি বলেন, তেহরানের সব হাওজা স্কুল এই পাঁচ বছর মেয়াদি পরিকল্পনার অধীনে পরিচালিত হচ্ছে, এবং প্রতিটি স্কুলের একটি নির্দিষ্ট ভূমিকা আছে। বর্তমানে ৩৫টি 'দারস-এ-খারেজ' (উচ্চতর পাঠ্যক্রম) চালু রয়েছে, এবং একাধিক পরামর্শ ও প্রচার কেন্দ্র সক্রিয় রয়েছে। আমীন, হিজরত, বাইয়ানাত এবং আরমান প্রজেক্টগুলো তেহরান সিটি কর্পোরেশনের সঙ্গে যৌথভাবে বাস্তবায়িত হচ্ছে।

৭৫টি হাওজা ইলমিয়া বিস্তৃত কার্যক্রম

তিনি আরও জানান, তেহরান প্রদেশের ৭৫টি হাওজা স্কুলে শ্রেণি ও শিক্ষামূলক কার্যক্রম চলছে, এবং তাদের পাশে আরও কিছু প্রতিষ্ঠান সক্রিয়ভাবে কাজ করছে ও বিভিন্ন সহযোগিতা চালু রয়েছে।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, আয়াতুল্লাহ আরাফির এই সফর অন্যান্য প্রদেশ সফরের তুলনায় ব্যতিক্রম। গত তিন বছরে নানা আলোচনা, পরিদর্শন ও বিশেষজ্ঞ পরামর্শের পর এই সফরকে হাওজার জন্য এক ঐতিহাসিক রূপান্তরের রূপ দেওয়া হয়েছে।

আরাফির সফরের দশটি মূল প্রোগ্রাম

এই সফরে দশটি গুরুত্বপূর্ণ প্রোগ্রাম রয়েছে:

হজরত আব্দুল আজিম হাসানীর (আ.) পবিত্র মাজার জিয়ারত

হাওজা শুরার সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ

শিক্ষকদের, প্রশাসকদের, সংসদ সদস্যদের এবং নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক

বুদ্ধিজীবীদের সঙ্গে বৈজ্ঞানিক ও প্রচারমূলক বিশেষ বৈঠক

তেহরানের সাংস্কৃতিক-প্রচারণা কেন্দ্র উদ্বোধন

ছাত্রদের সঙ্গে সাক্ষাৎ


সংস্কৃতি ও প্রচারণার ঘাঁটি উদ্বোধন: ভবিষ্যতের জন্য বড় পদক্ষেপ

তিনি জানান, হাওজা পরিচালনা কেন্দ্রের দ্বিতীয় ভবনকে সাংস্কৃতিক ও প্রচারণামূলক কেন্দ্র হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে এবং শুক্রবার আয়াতুল্লাহ আরাফির উপস্থিতিতে এটি উদ্বোধন হবে। এই ভবনে হাওজা নিউজ এজেন্সির অফিস, শিক্ষকদের মিলিশিয়া, মিডিয়া ও ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্ম কেন্দ্রসহ অন্যান্য প্রচারণা কেন্দ্রগুলো থাকবে।

তিনি আরও বলেন, এই সফরের অংশ হিসেবে, গবেষণা, প্রচার, রাজনৈতিক ও সামাজিক অর্জনের একটি প্রদর্শনী ‘ইওয়ান-ই-রেই’ কনফারেন্স হলে অনুষ্ঠিত হবে যাতে মানুষ হাওজার সামর্থ্য সম্পর্কে আরও ভালোভাবে জানতে পারে। তিনি বলেন, “তেহরানের হাওজা জনগণের কণ্ঠস্বর এবং সমাজ, তরুণ ও রাষ্ট্রের প্রয়োজন পূরণের জন্য কাজ করতে চায়; কেবল চার দেওয়ালে সীমাবদ্ধ থাকা হাওজার লক্ষ্য নয়।”

হাওজায় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার

হুজ্জাতুল ইসলাম রহিমি সাদিক বলেন, হাওজা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ক্ষেত্রে অনেক প্রতিষ্ঠান থেকে এগিয়ে রয়েছে। ছাত্রদের প্রশিক্ষণ, বিশেষায়িত শাখা চালু এবং আধুনিক বিজ্ঞান গ্রহণ ভবিষ্যতের অগ্রাধিকারে রয়েছে।

তিনি বলেন, এই সফরে পাঁচটি মূল দিক নির্ধারণ করা হয়েছে:

১. বিশেষায়িত শাখাগুলোর বিস্তার
২. 'দারস-এ-খারেজ' পাঠ্যক্রমের বৃদ্ধি
৩. একাডেমিক মানোন্নয়ন
৪. প্রাদেশিক সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমন্বয় জোরদার
৫. আন্তর্জাতিক সম্পর্ক উন্নয়ন

এই পাঁচটি অগ্রাধিকার হাওজা তেহরানকে ১৪১৪ সালের লক্ষ্যের দিকে নিয়ে যাবে।

আপনার কমেন্ট

You are replying to: .
captcha